নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজধানীর বনানী থানাধীন মহাখালীর চিহ্নিত সন্ত্রাসী আতর আলী (৫০) অপরাধ কর্মকাণ্ডে ফের বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। কিশোর গ্যাং এর নেতৃত্বসহ মহাখালী সাততলা বস্তিকে ঘিরে গড়ে তুলেছেন অপরাধের শক্তিশালী এক সাম্রাজ্য! বস্তির অবৈধ গ্যাস, বিদ্যুৎ ও মাদক ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ তার হাতে।
সম্প্রতি আতর আলীর বিরুদ্ধে দেড় লাখ টাকা আত্মসাৎ ও ধর্ষণের অভিযোগে বনানী থানায় মামলা দায়ের করেছেন এক গৃহবধূ (৩৫)। মামলা নং ১৪, তারিখ ৯/০৮/২০২৩।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ধর্ষিতা গৃহবধূর সাথে পূর্ব পরিচিতির সুবাদে আতর আলীর সাথে সু-সম্পর্ক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে সাততলা বস্তি এলাকায় ৪টি টিনশেড কক্ষ কিনে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে গত এক বছরে আতর আলী ঐ গৃহবধূর কাছ থেকে দেড় লাখ টাকা নেয়। পরবর্তীতে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী আতর আলী কক্ষ কিনে দিতে ব্যর্থ হলে গৃহবধূ টাকা ফেরত চান। কিন্তু আতর আলী টাকা দেই দিচ্ছি বলে বিভিন্ন অযুহাতে সময় ক্ষেপণ করতে থাকে। গত ৪/০৬/২৩ তারিখে পাওনা টাকা দিবে বলে দুপুর আনুমানিক ১:১৫ ঘটিকায় আতর আলী গৃহবধূকে বাসায় যেতে বলে। অতঃপর দুপুর আনুমানিক ২ ঘটিকায় ঐ গৃহবধূ আতর আলীর বসত ঘরে গেলে ঘরের দরজা বন্ধ করে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে আতর আলী। পরে মান সম্মানের ভয়ে চিৎকার চেঁচামেচি না করে গৃহবধূ সেখান থেকে চলে আসেন। পরবর্তীতে আতর আলী ধর্ষণের বিষয়টি প্রকাশ করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন তারিখ ও সময়ে ঐ গৃহবধূর ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। সর্বশেষ আতর আলী গত ৮/০৮/২০২৩ তারিখে আনুমানিক সন্ধ্যা ৬:৫৫ ঘটিকায় গৃহবধূকে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। পরবর্তীতে গৃহবধূর মেয়েকে (১৪) আতর আলী তার বসত ঘরে নিয়ে যেতে বলে। না নিয়ে গেলে পাওনা টাকা ফেরত দিবে না এবং বিভিন্ন ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে।
মামলার বিবরণে গৃহবধূ আরও উল্লেখ করেন, বর্তমানে আমি আমার মেয়েকে নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। বিষয়টি নিয়ে আমার আত্মীয় স্বজনের সহিত আলাপ আলোচনা করে থানায় এসে এজাহার দায়ের করতে বিলম্ব হলো।
জানা গেছে, ঘটনাটি জানাজানির পর স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি সালিশের নামে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা শেষে জবানবন্দি দিয়েছেন ধর্ষিতা গৃহবধূ।
বনানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আতর আলী এলাকায় নানান অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জড়িত। তার বিরুদ্ধে থানা ও আদালতে রয়েছে একাধিক গ্যাস, বিদ্যুৎ চুরি, মাদকের মামলা। ইতোপূর্বে সে একাধিকবার কারাভোগও করেছে। স্থানীয় কিছু ব্যক্তির কারণে সে দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে। আতর আলীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ মহাখালী সাততলা বস্তি ও আশপাশের নারী পুরুষ। আতর আলীর বিরুদ্ধে কেউ কোন কথা বললে সেও তার পরিবারের উপর নেমে আসে অন্ধকার, চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতে হয় তাদেরকে।